দৃষ্টিশক্তি ৬/৬ করার কোনো জাদুকরী উপায় নেই, তবে সঠিক যত্ন ও জীবনযাত্রার পরিবর্তনে চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখা সম্ভব।
Key Takeaways
চোখের নিয়মিত যত্ন নিন।
স্বাস্থ্যকর খাবার খান।
পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও ঘুম নিশ্চিত করুন।
স্ক্রিন টাইম সীমিত করুন।
চোখের ব্যায়াম করুন।
ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
অনেকেই জানতে চান চোখের দৃষ্টি ৬/৬ করার উপায় কী। আমাদের বেশিরভাগেরই এটি একটি সাধারণ প্রশ্ন, কারণ ভালো দৃষ্টিশক্তি জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। কিন্তু চোখের সমস্যা হলে বা দৃষ্টিশক্তি কমে গেলে আমরা অনেকেই বেশ চিন্তিত হয়ে পড়ি। তবে আশার কথা হলো, আধুনিক জীবনযাত্রায় কিছু সহজ টিপস মেনে চললে চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখা যায় এবং দৃষ্টিশক্তি6/6 করার পথে এগিয়ে যাওয়া যায়। এই লেখায় আমরা চোখের যত্ন নেওয়ার কিছু সহজ ও কার্যকর উপায় নিয়ে আলোচনা করব, যা আপনার চোখের দৃষ্টিশক্তি6/6 করতে সাহায্য করবে।
Table of Contents
- কেন চোখের দৃষ্টিশক্তি ৬/৬ হওয়া জরুরি?
- দৃষ্টিশক্তি ৬/৬ করার সহজ টিপস
- জীবনযাত্রার অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ দিক
- দৃষ্টিশক্তি6/6 এবং লেন্স/চশমা
- প্রাকৃতিক উপায়ে দৃষ্টিশক্তি6/6 করার ধারণা
- কখন ডাক্তারের সাহায্য নেবেন?
- প্রচলিত ভুল ধারণা (Myths)
- FAQ: আপনার সাধারণ প্রশ্নগুলোর উত্তর
- প্রশ্ন ১: চোখের দৃষ্টি কি সত্যিই ৬/৬ করা সম্ভব?
- প্রশ্ন ২: চোখের পাওয়ার কমানোর জন্য কি কোনো ঘরোয়া উপায় আছে?
- প্রশ্ন ৩: শিশুদের দৃষ্টিশক্তি6/6 রাখার জন্য কী করা উচিত?
- প্রশ্ন ৪: কন্টাক্ট লেন্স কি চোখের জন্য ক্ষতিকর?
- প্রশ্ন ৫: রাতের বেলা দেখতে সমস্যা হলে কী করব?
- প্রশ্ন ৬: কম্পিউটার ভিশন সিনড্রোম (CVS) থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় কী?
- প্রশ্ন ৭: চোখের প্রদাহ বা চুলকানি হলে কী ব্যবহার করা উচিত?
- উপসংহার
কেন চোখের দৃষ্টিশক্তি ৬/৬ হওয়া জরুরি?
চোখের দৃষ্টিশক্তি ৬/৬ হওয়া মানে হলো আপনার দৃষ্টিশক্তি স্বাভাবিক (normal vision)। অর্থাৎ, আপনি ২০ ফুট দূর থেকে যে জিনিসটি একজন স্বাভাবিক দৃষ্টিশক্তির মানুষ দেখতে পায়, সেটি আপনিও পরিষ্কারভাবে দেখতে পাচ্ছেন। এই স্বাভাবিক দৃষ্টিশক্তি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গাড়ি চালানো, বই পড়া, খেলাধুলা করা, এমনকি ছোটখাটো কাজগুলোও ঠিকমতো করার জন্য পরিষ্কার দৃষ্টি অপরিহার্য। দৃষ্টিশক্তি6/6 না থাকলে এসব কাজে সমস্যা হয়, যা আমাদের জীবনযাত্রায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
দৃষ্টিশক্তি ৬/৬ করার সহজ টিপস
চোখের দৃষ্টিশক্তি6/6 করার জন্য কোনো রাতারাতি সমাধান নেই। বরং, এটি একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া যার জন্য প্রয়োজন নিয়মিত যত্ন এবং জীবনযাত্রায় কিছু পরিবর্তন আনা। নিচে কিছু কার্যকরী টিপস দেওয়া হলো:
১. স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করুন
চোখের স্বাস্থ্যের জন্য সঠিক পুষ্টি অত্যন্ত জরুরি। ভিটামিন, মিনারেলস এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার দৃষ্টিশক্তি6/6 করতে এবং চোখের রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে।
চোখের জন্য উপকারী খাবারসমূহ:
- ভিটামিন এ: চোখের রেটিনার জন্য ভিটামিন এ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গাজর, মিষ্টি আলু, পালংশাক, ডিম এবং ডেইরি পণ্য ভিটামিন এ-এর ভালো উৎস।
- ভিটামিন সি: এটি একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা চোখের ছানি (cataracts) প্রতিরোধে সাহায্য করে। কমলালেবু, আমলকী, পেয়ারা, স্ট্রবেরি ও ক্যাপসিকামে প্রচুর ভিটামিন সি পাওয়া যায়।
- ভিটামিন ই: চোখের কোষগুলোকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে। বাদাম, সূর্যমুখীর বীজ, এবং অ্যাভোকাডোতে ভিটামিন ই পাওয়া যায়।
- ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড: চোখের শুষ্কতা (dry eyes) কমাতে এবং রেটিনার স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করে। তৈলাক্ত মাছ (যেমন – ইলিশ, স্যামন), ফ্ল্যাক্সসিড এবং আখরোটে এটি পাওয়া যায়।
- লুটেইন এবং জেক্সানথিন: এই দুটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট চোখের ম্যাকুলা (macula) স্বাস্থ্যকর রাখে এবং বয়স-সম্পর্কিত ম্যাকুলার ডিজেনারেশন (AMD) প্রতিরোধে সহায়ক। সবুজ শাকসবজি, ডিমের কুসুম এবং ভুট্টায় এগুলো পাওয়া যায়।
প্রচুর পরিমাণে পানি পান করাও চোখের আর্দ্রতা বজায় রাখার জন্য জরুরি। দিনে অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন।
২. কম্পিউটার ও মোবাইল ব্যবহারের নিয়ম
বর্তমান ডিজিটাল যুগে, কম্পিউটার, ল্যাপটপ বা মোবাইল ফোন ব্যবহার আমাদের জীবনের অংশ হয়ে গেছে। কিন্তু এর অতিরিক্ত ব্যবহার চোখের উপর মারাত্মক চাপ সৃষ্টি করে, যা দৃষ্টিশক্তি6/6 করার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
- ২০-২০-২০ নিয়ম অনুসরণ করুন: প্রতি ২০ মিনিট স্ক্রিন ব্যবহারের পর, ২০ ফুট দূরত্বের কোনো বস্তুর দিকে ২০ সেকেন্ডের জন্য তাকান। এটি চোখের উপর চাপ কমাতে সাহায্য করে।
- স্ক্রিনের উজ্জ্বলতা নিয়ন্ত্রণ করুন: স্ক্রিনের আলো যেন খুব বেশি বা খুব কম না হয়। এটি আপনার চোখের আরামের উপর নির্ভর করে।
- সঠিক দূরত্ব বজায় রাখুন: কম্পিউটার স্ক্রিন থেকে অন্তত এক হাত (প্রায় ২৫ ইঞ্চি) এবং মোবাইল ফোন থেকে ১২-১৪ ইঞ্চি দূরত্ব বজায় রাখুন।
- চোppers ‘blink’ করুন: দীর্ঘক্ষণ স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকলে চোখের পলক কম পড়ে, যা চোখ শুষ্ক করে দেয়। তাই সচেতনভাবে ঘন ঘন পলক ফেলা জরুরি।
ডিজিটাল আই স্ট্রেইন (Digital Eye Strain) এর লক্ষণ:
নিম্নলিখিত লক্ষণগুলি দেখা দিলে বুঝবেন আপনার চোখে অতিরিক্ত চাপ পড়ছে:
- চোখ জ্বালাপোড়া করা
- চোখ লাল হয়ে যাওয়া
- মাথাব্যথা
- আলোর প্রতি সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি
- দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যাওয়া
৩. পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রাম
সারাদিনের ক্লান্তি দূর করতে এবং চোখের কোষগুলোকে পুনরুজ্জীবিত করতে পর্যাপ্ত ঘুম অপরিহার্য। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের জন্য প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন।
- ঘুমের সময় চোখ সম্পূর্ণ বিশ্রাম পায় এবং দিনের বেলার চাপ থেকে মুক্তি পায়।
- পর্যাপ্ত ঘুম চোখের শুষ্কতা এবং লালচে ভাব কমাতেও সাহায্য করে।
- একটি নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যাওয়া এবং ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
৪. চোখের ব্যায়াম (Eye Exercises)
কিছু সহজ চোখের ব্যায়াম চোখের পেশীগুলোকে শক্তিশালী করতে এবং রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে সাহায্য করে। নিয়মিত এই ব্যায়ামগুলো করলে দৃষ্টিশক্তি6/6 করার সম্ভাবনা বাড়ে।
সহজ চোখের ব্যায়াম:
- চোখ ঘোরানো: চোখ বন্ধ করে ধীরে ধীরে ঘড়ির কাঁটার দিকে এবং বিপরীত দিকে ৫ বার করে ঘোরান।
- চোখ পিটপিট করা: দ্রুত ২০-৩০ বার চোখ পিটপিট করুন। এতে চোখের জলীয় অংশ ঠিক থাকে।
- ফোকাস পরিবর্তন: আপনার সামনে থাকা কোনো বস্তুর দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকুন। তারপর দূরে থাকা কোনো বস্তুর দিকে তাকান। এভাবে কয়েকবার করুন।
- হাতের তালু দিয়ে ঢেকে রাখা (Palming): দুই হাতের তালু ঘষে গরম করে নিন। তারপর আলতোভাবে বন্ধ চোখের উপর এমনভাবে রাখুন যেন আলো প্রবেশ না করে। ৫-১০ সেকেন্ড এভাবে থাকুন। এটি চোখের পেশীকে শিথিল করে।
৫. চোখের সুরক্ষা
চোখ খুব সংবেদনশীল অঙ্গ। তাই একে সুরক্ষিত রাখা অত্যন্ত জরুরি।
- সূর্যের আলো থেকে সুরক্ষা: বাইরে বের হলে সানগ্লাস ব্যবহার করুন। ক্ষতিকর অতিবেগুনি (UV) রশ্মি চোখের ক্ষতি করতে পারে।
- ধুলোবালি ও কণা থেকে সুরক্ষা: ধুলাবালি বা রাসায়নিক উপাদানের সংস্পর্শে কাজ করার সময় সেফটি গগলস ব্যবহার করুন।
- ধূমপান পরিহার করুন: ধূমপান চোখের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এটি ম্যাকুলার ডিজেনারেশন এবং ছানির ঝুঁকি বাড়ায়।
৬. নিয়মিত চক্ষু পরীক্ষা
চোখের কোনো সমস্যা প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করা গেলে তা সহজেই নিরাময় করা যায়। তাই বছরে অন্তত একবার চক্ষু বিশেষজ্ঞের (Ophthalmologist) কাছে গিয়ে চোখ পরীক্ষা করানো উচিত।
বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা আপনার দৃষ্টিশক্তির কোনো পরিবর্তন হচ্ছে কিনা, চোখের কোনো রোগ দেখা দিচ্ছে কিনা, তা নির্ণয় করতে পারবেন এবং সে অনুযায়ী সঠিক পরামর্শ দেবেন। বিশেষ করে যাদের ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপের মতো রোগ আছে, তাদের জন্য নিয়মিত চক্ষু পরীক্ষা খুবই জরুরি।
Pro Tip: সরাসরি সূর্যের দিকে তাকানো থেকে বিরত থাকুন। সূর্যের আলোয় থাকা অতিবেগুনী রশ্মি (UV rays) চোখের রেটিনার ক্ষতি করতে পারে।
জীবনযাত্রার অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ দিক
দৃষ্টিশক্তি6/6 করার জন্য শুধু চোখের যত্ন নিলেই হবে না, সামগ্রিক জীবনযাত্রার উপরও এটি নির্ভর করে।
শারীরিক ব্যায়াম
নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম শুধু শরীরকেই সুস্থ রাখে না, এটি রক্ত সঞ্চালনও বৃদ্ধি করে। উন্নত রক্ত সঞ্চালন চোখের বিভিন্ন অংশে পুষ্টি সরবরাহ এবং বর্জ্য অপসারণে সাহায্য করে, যা দৃষ্টিশক্তি6/6 করার প্রক্রিয়াকে সহায়তা করে।
মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ
অতিরিক্ত মানসিক চাপ শরীরের উপর নানাবিধ ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে, যার মধ্যে চোখের উপর চাপ বৃদ্ধি অন্যতম। যোগ ব্যায়াম, ধ্যান (meditation) বা পছন্দের কোনো শখের মাধ্যমে মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা
চোহের সংক্রমণ (infection) এড়ানোর জন্য হাত পরিষ্কার রাখা অত্যন্ত জরুরি। চোখে হাত দেওয়ার আগে অথবা কন্টাক্ট লেন্স পরার আগে হাত ভালোভাবে ধুয়ে নিন।
দৃষ্টিশক্তি6/6 এবং লেন্স/চশমা
অনেকের মনেই প্রশ্ন আসে, চশমা বা কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহার করলে কি দৃষ্টিশক্তি6/6 করা সম্ভব? সত্যি কথা বলতে, চশমা বা লেন্স সরাসরি আপনার দৃষ্টিশক্তি6/6 করে না। বরং, এটি আপনার দৃষ্টিশক্তির ঘাটতি পূরণ করে এবং আপনি পরিষ্কারভাবে দেখতে সাহায্য করে।
যদি আপনার দৃষ্টিশক্তি6/6 না থাকে এবং লেন্স বা চশমার প্রয়োজন হয়, তবে একজন চক্ষু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী সঠিক পাওয়ারের লেন্স বা চশমা ব্যবহার করুন। আপনার দৃষ্টিশক্তির কোনো পরিবর্তন হলে বা চশমার পাওয়ার বদলানোর প্রয়োজন হলে দ্রুত ডাক্তারের শরণাপন্ন হন।
কিছু ক্ষেত্রে, চোখের অস্ত্রোপচার (যেমন – LASIK) দৃষ্টিশক্তি6/6 করার কার্যকর উপায় হতে পারে। তবে এটি একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ ও সম্পূর্ণ পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরেই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।
প্রাকৃতিক উপায়ে দৃষ্টিশক্তি6/6 করার ধারণা
অনেকে বিশ্বাস করেন যে কিছু বিশেষ ভেষজ বা প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করে রাতারাতি দৃষ্টিশক্তি6/6 লাভ করা সম্ভব। কিন্তু বৈজ্ঞানিকভাবে এর তেমন কোনো প্রমাণ নেই। তবে, কিছু ভেষজ উপাদান যা ভিটামিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ, তা চোখের সামগ্রিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করতে পারে। যেমন:
- আমলকী: এতে প্রচুর ভিটামিন সি রয়েছে, যা চোখের জন্য উপকারী।
- হলুদ: এতে থাকা কার্কিউমিন (curcumin) একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
- জিঙ্ক সমৃদ্ধ খাবার: কুমড়োর বীজ, বাদাম দৃষ্টিশক্তির জন্য ভালো।
তবে মনে রাখতে হবে, এগুলো শুধুমাত্র পরিপূরক (supplementary) হিসেবে কাজ করতে পারে, কোনো রোগের নিরাময় নয়।
কখন ডাক্তারের সাহায্য নেবেন?
কিছু লক্ষণ দেখলে সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত:
- হঠাৎ দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া
- চোখে তীব্র ব্যথা
- আলোর ঝলকানি দেখা
- চোখের সামনে কালো দাগ বা flottors বেড়ে যাওয়া
- চোখে কোনো আঘাত লাগা
এই লক্ষণগুলো গুরুতর কোনো চোখের সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে, যা দ্রুত চিকিৎসা না করালে দৃষ্টিশক্তি6/6 করার প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হতে পারে এবং স্থায়ী ক্ষতি হতে পারে।
প্রচলিত ভুল ধারণা (Myths)
চোখের দৃষ্টিশক্তি6/6 করার বিষয়ে কিছু ভুল ধারণা প্রচলিত আছে:
ভুল ধারণা (Myth) | সত্যতা (Fact) |
---|---|
চোখ দিয়ে বেশি বেশি ব্যায়াম করলে দৃষ্টিশক্তি6/6 হয়। | চোখের ব্যায়াম চোখের পেশী শিথিল করতে পারে, কিন্তু দৃষ্টিশক্তির স্থায়ী ৬/৬ করা কঠিন, বিশেষ করে যদি জন্মগত বা বয়স-জনিত কারণ থাকে। |
ক্যারোটিন সমৃদ্ধ খাবার (যেমন – গাজর) খেলেই দৃষ্টিশক্তি6/6 হয়ে যায়। | গাজর ভিটামিন এ-এর ভালো উৎস এবং এটি রাতের দৃষ্টিশক্তি (night vision) উন্নত করতে সাহায্য করে, কিন্তু এটি দৃষ্টিশক্তির স্থায়ী ৬/৬ নিশ্চিত করে না। |
কম আলোতে পড়লে চোখের পাওয়ার বেড়ে যায়। | কম আলোতে পড়লে চোখে চাপ পড়তে পারে, যা সাময়িকভাবে ক্লান্তি বা মাথাব্যথার কারণ হতে পারে, কিন্তু এটি স্থায়ীভাবে দৃষ্টিশক্তি6/6 কমিয়ে দেয় না। |
চশমা পরলে চোখের পাওয়ার আরও বেড়ে যায়। | চশমা শুধুমাত্র দৃষ্টির ত্রুটি সংশোধন করে, এটি চোখের পাওয়ার বাড়ায় না। সঠিক পাওয়ারের চশমা ব্যবহার না করলে চোখে অতিরিক্ত চাপ পড়তে পারে। |
FAQ: আপনার সাধারণ প্রশ্নগুলোর উত্তর
প্রশ্ন ১: চোখের দৃষ্টি কি সত্যিই ৬/৬ করা সম্ভব?
উত্তর: হ্যাঁ, অনেকের ক্ষেত্রে সম্ভব। যদি দৃষ্টিশক্তির সমস্যা সঠিক সময়ে শনাক্ত করা যায় এবং জীবনযাত্রায় প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনা হয়, তবে দৃষ্টিশক্তি6/6 করা বা এর কাছাকাছি নিয়ে আসা সম্ভব। তবে, কিছু ক্ষেত্রে যেমন – জন্মগত কারণ বা গুরুতর রোগ, সেগুলোর জন্য সম্পূর্ণ ৬/৬ নাও হতে পারে, তবে চিকিৎসকের পরামর্শে তা উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত করা যেতে পারে।
প্রশ্ন ২: চোখের পাওয়ার কমানোর জন্য কি কোনো ঘরোয়া উপায় আছে?
উত্তর: সরাসরি চোখের পাওয়ার কমানোর জন্য কোনো প্রমাণিত ঘরোয়া উপায় নেই। তবে, স্বাস্থ্যকর খাবার, চোখের ব্যায়াম, পর্যাপ্ত ঘুম এবং স্ক্রিন টাইম নিয়ন্ত্রণ করলে চোখের স্বাস্থ্যের উন্নতি হয় এবং পাওয়ার বাড়ার গতি কমতে পারে।
প্রশ্ন ৩: শিশুদের দৃষ্টিশক্তি6/6 রাখার জন্য কী করা উচিত?
উত্তর: শিশুদের জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার, স্ক্রিন টাইম সীমিত রাখা, বাইরে খেলাধুলায় উৎসাহ দেওয়া এবং নিয়মিত চক্ষু পরীক্ষা করানো অত্যন্ত জরুরি।
প্রশ্ন ৪: কন্টাক্ট লেন্স কি চোখের জন্য ক্ষতিকর?
উত্তর: সঠিক নিয়মে ব্যবহার করলে কন্টাক্ট লেন্স খুব একটা ক্ষতিকর নয়। তবে অপরিষ্কার হাতে লেন্স পরা, দীর্ঘক্ষণ ব্যবহার করা বা অপেশাদার লেন্স ব্যবহার করলে চোখে সংক্রমণ বা অন্যান্য সমস্যা হতে পারে।
প্রশ্ন ৫: রাতের বেলা দেখতে সমস্যা হলে কী করব?
উত্তর: রাতের বেলা দেখতে সমস্যা হলে (night blindness) দ্রুত চক্ষু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। এটি ভিটামিন এ-এর অভাব বা অন্যান্য রোগের লক্ষণ হতে পারে।
প্রশ্ন ৬: কম্পিউটার ভিশন সিনড্রোম (CVS) থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় কী?
উত্তর: CVS থেকে বাঁচতে ২০-২০-২০ নিয়ম পালন করুন, স্ক্রিনের উজ্জ্বলতা ঠিক রাখুন, চোখের ড্রপ ব্যবহার করুন এবং কাজের ফাঁকে চোখের বিশ্রাম নিন।
প্রশ্ন ৭: চোখের প্রদাহ বা চুলকানি হলে কী ব্যবহার করা উচিত?
উত্তর: চোখে প্রদাহ বা চুলকানি হলে নিজে থেকে কোনো ড্রপ ব্যবহার না করে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। সাধারণত, স্যালাইন ওয়াটার বা ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী আই ড্রপ ব্যবহার করা যেতে পারে।
উপসংহার
চোখের দৃষ্টিশক্তি6/6 করা একটি দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া, যার জন্য প্রয়োজন সুষম খাদ্য, সঠিক জীবনযাপন, নিয়মিত যত্ন এবং প্রয়োজন অনুযায়ী চিকিৎসকের পরামর্শ। উপরে আলোচিত টিপসগুলো মেনে চললে আপনি অবশ্যই আপনার চোখের স্বাস্থ্য উন্নত করতে পারবেন এবং দৃষ্টিশক্তি6/6 করার পথে এগিয়ে যেতে পারবেন। আপনার চোখ অমূল্য; তাই এর যত্ন নিন, সুস্থ থাকুন।