পায়খানা ক্লিয়ার করার সেরা ট্যাবলেটগুলো আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী বেছে নিন। কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পেতে কার্যকর ঔষধের তথ্য জানুন।
Table of Contents
- কি-টুকরো গ্রহণ
- ভূমিকা
- পায়খানা ক্লিয়ার করার ট্যাবলেটের প্রয়োজনীয়তা
- সেরা পায়খানা ক্লিয়ার করার ট্যাবলেটের নাম ও প্রকারভেদ
- “পায়খানা ক্লিয়ার করার ট্যাবলেট” ব্যবহারের নির্দেশিকা
- বাংলাদেশের বাজারে জনপ্রিয় কিছু “পায়খানা ক্লিয়ার করার ট্যাবলেট”
- “পায়খানা ক্লিয়ার করার ট্যাবলেট” এর উপকারিতা ও ঝুঁকি
- প্রাকৃতিক উপায়ে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার উপায়
- কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে করণীয়
- প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী (FAQ)
- প্রশ্ন ১: পায়খানা ক্লিয়ার করার ট্যাবলেট কত ঘন ঘন খাওয়া উচিত?
- প্রশ্ন ২: কোন “পায়খানা ক্লিয়ার করার ট্যাবলেট” সবচেয়ে দ্রুত কাজ করে?
- প্রশ্ন ৩: গর্ভবতী অবস্থায় কি কোষ্ঠকাঠিন্যের ট্যাবলেট খাওয়া নিরাপদ?
- প্রশ্ন ৪: দীর্ঘমেয়াদী কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য কি ঔষধের উপর নির্ভরশীল হওয়া উচিত?
- প্রশ্ন ৫: বাচ্চাদের জন্য কোষ্ঠকাঠিন্যের ট্যাবলেট কি ভিন্ন হয়?
- প্রশ্ন ৬: “পায়খানা ক্লিয়ার করার ট্যাবলেট” কি ওজন কমাতে সাহায্য করে?
- প্রশ্ন ৭: ঔষধের পাশাপাশি কি অন্য কোনো সাপ্লিমেন্ট ব্যবহার করা যেতে পারে?
- উপসংহার
কি-টুকরো গ্রহণ
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে “পায়খানা ক্লিয়ার করার ট্যাবলেট” কার্যকর।
সেরা ট্যাবলেটগুলোর নাম ও কার্যকারিতা জেনে সঠিকটি বেছে নিন।
ঔষধের পাশাপাশি খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনুন।
ডাক্তারের পরামর্শে ঔষধ সেবন জরুরি।
প্রাকৃতিক উপায়েও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করা সম্ভব।
ভূমিকা
কোষ্ঠকাঠিন্য একটি সাধারণ সমস্যা যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনকে কঠিন করে তুলতে পারে। মলত্যাগে কষ্ট হওয়া, পেট ভারি লাগা বা নিয়মিত মলত্যাগ না হওয়া – এই উপসর্গগুলো খুবই অস্বস্তিকর। সঠিক সময়ে এর সমাধান না করলে এটি আরও গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে পারে। বাজারে অনেক “পায়খানা ক্লিয়ার করার ট্যাবলেট” পাওয়া যায়, তাই কোনটি আপনার জন্য সেরা হবে তা বোঝা কঠিন হতে পারে। কিন্তু চিন্তা করবেন না, এই গাইডটি আপনাকে সহজভাবে সেরা কিছু নাম, তাদের কার্যকারিতা এবং কখন কোনটি ব্যবহার করা উচিত সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবে। আমরা আপনাকে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পেতে একটি সহজ পথ দেখাবো।
পায়খানা ক্লিয়ার করার ট্যাবলেটের প্রয়োজনীয়তা
আপনার কি প্রায়শই মলত্যাগ করতে সমস্যা হয়? কোষ্ঠকাঠিন্য বিভিন্ন কারণে হতে পারে, যেমন – অপর্যাপ্ত ফাইবার গ্রহণ, কম পানি পান করা, শারীরিক কার্যকলাপের অভাব, বা কিছু ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। দীর্ঘস্থায়ী কোষ্ঠকাঠিন্য কেবল অস্বস্তিকরই নয়, এটি পাইলস, ফিশার বা অন্ত্রের অন্যান্য রোগের ঝুঁকিও বাড়িয়ে দিতে পারে। এই অবস্থায়, “পায়খানা ক্লিয়ার করার ট্যাবলেট” একটি কার্যকর সমাধান হিসেবে কাজ করে। এই ট্যাবলেটগুলো মল নরম করে এবং অন্ত্রের চলাচলকে সহজ করে তোলে, যা আপনাকে দ্রুত আরাম দিতে পারে।
কখন কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য ট্যাবলেট প্রয়োজন?
সাধারণত, জীবনযাত্রার পরিবর্তন, যেমন – বেশি ফাইবারযুক্ত খাবার খাওয়া, পর্যাপ্ত পানি পান করা এবং নিয়মিত ব্যায়াম করার মাধ্যমে কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করা যায়। তবে, যখন এই পদ্ধতিগুলো যথেষ্ট কার্যকরী হয় না, তখন ডাক্তারের পরামর্শে ঔষধ সেবন করা যেতে পারে।
যদি আপনার সপ্তাহে তিনবারের কম মলত্যাগ হয়।
যদি আপনার মল খুব শক্ত ও শুকনো হয়।
যদি মলত্যাগের সময় ব্যথা বা চাপ অনুভব করেন।
যদি কোষ্ঠকাঠিন্য দীর্ঘস্থায়ী হয় (কয়েক সপ্তাহের বেশি)।
সেরা পায়খানা ক্লিয়ার করার ট্যাবলেটের নাম ও প্রকারভেদ
বাজারে বিভিন্ন ধরণের “পায়খানা ক্লিয়ার করার ট্যাবলেট” পাওয়া যায়। এদের কার্যপ্রণালী ভিন্ন ভিন্ন। আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী সঠিক ঔষধটি বেছে নেওয়া জরুরি। এখানে কিছু জনপ্রিয় ও কার্যকর ট্যাবলেটের নাম এবং তাদের প্রকারভেদ আলোচনা করা হলো:
১. বাল্ক-ফর্মিং ল্যাক্সেটিভ (Bulk-Forming Laxatives)
এই ধরণের ট্যাবলেটগুলো মূলত ফাইবার বা সেলুলোজ দিয়ে তৈরি। এগুলো হজম হয় না, কিন্তু পেটের মধ্যে পানি শোষণ করে মলের পরিমাণ বাড়িয়ে তোলে। এর ফলে মল নরম হয় এবং অন্ত্রের উপর চাপ প্রয়োগ করে মলত্যাগে সহায়তা করে।
কার্যপ্রণালী: পানি শোষণ করে মল নরম ও বড় করে।
উদাহরণ: ইসুবগুলের ভুসি (Psyllium Husk), মিথাইলসেলুলোজ (Methylcellulose)।
সুবিধা: এগুলো সাধারণত সবচেয়ে নিরাপদ এবং দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত।
অসুবিধা: কাজ করতে ১২-২৪ ঘণ্টা সময় লাগতে পারে। পর্যাপ্ত পানি পান না করলে এটি সমস্যা আরও বাড়াতে পারে।
প্রো টিপ: বাল্ক-ফর্মিং ল্যাক্সেটিভ ব্যবহার করার সময় প্রচুর পানি পান করা অপরিহার্য।
২. স্টুল সফটনার (Stool Softeners)
এই ঔষধগুলো মলের মধ্যে পানি এবং ফ্যাট প্রবেশ করতে সাহায্য করে, যার ফলে মল নরম হয় এবং সহজে বের হয়ে যেতে পারে। এগুলো অন্ত্রের সংকোচনকে প্রভাবিত করে না, বরং মলের ভৌত বৈশিষ্ট্য পরিবর্তন করে।
কার্যপ্রণালী: মলের মধ্যে পানি ও ফ্যাট মিশিয়ে মল নরম করে।
উদাহরণ: ডোকুসেট সোডিয়াম (Docusate Sodium)।
সুবিধা: এদের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সাধারণত কম।
অসুবিধা: এগুলো মলত্যাগের উদ্দীপনা তৈরি করে না, শুধু মলকে নরম করে।
৩. অস্মোটিক ল্যাক্সেটিভ (Osmotic Laxatives)
এই ঔষধগুলো অন্ত্রে পানি টেনে নিয়ে আসে। এর ফলে মলের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় এবং মল নরম হয়। এগুলো সাধারণত দ্রুত কাজ করে।
কার্যপ্রণালী: অন্ত্রে পানি টেনে এনে মল তরল করে।
উদাহরণ:
ল্যাকটুলোজ (Lactulose): এটি একটি সিন্থেটিক সুগার যা হজম হয় না এবং অন্ত্রে পানি ধরে রাখে।
ম্যাগনেসিয়াম সাইট্রেট (Magnesium Citrate) বা বেয়ার (Bowel) ঔষধ: এগুলো বেশ শক্তিশালী এবং দ্রুত কাজ করে।
পলিইথিলিন গ্লাইকোল (Polyethylene Glycol – PEG): এটিও অন্ত্রে পানি ধরে রাখতে সাহায্য করে।
সুবিধা: দ্রুত ফল দেয়, অনেক ক্ষেত্রে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে।
অসুবিধা: বেশি ব্যবহারে পেটে গ্যাস, পেট ব্যথা বা ডায়রিয়া হতে পারে। দীর্ঘস্থায়ী ব্যবহারে শরীর থেকে ইলেক্ট্রলাইট কমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে।
৪. স্টিমুল্যান্ট ল্যাক্সেটিভ (Stimulant Laxatives)
এই ঔষধগুলো সরাসরি অন্ত্রের মাধ্যমে স্নায়ু উদ্দীপিত করে, যা অন্ত্রের পেশী সংকোচন বাড়ায় এবং মলত্যাগে দ্রুত সহায়তা করে।
কার্যপ্রণালী: অন্ত্রের পেশী সংকোচন বাড়িয়ে মল বের হতে সাহায্য করে।
উদাহরণ:
সেন্না (Senna): এটি একটি প্রাকৃতিক উপাদান যা অনেক ল্যাক্সেটিভ ঔষধে ব্যবহৃত হয়।
বিসাকোডিল (Bisacodyl): এটি ট্যাবলেট বা সাপোজিটরিতে পাওয়া যায়।
সুবিধা: খুব দ্রুত কাজ করে, সাধারণত ৬-১২ ঘণ্টার মধ্যে।
অসুবিধা: দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহারে অন্ত্রের স্বাভাবিক কাজ ব্যাহত হতে পারে এবং এই ঔষধের উপর নির্ভরশীলতা তৈরি হতে পারে। পেটে ব্যথা বা ক্র্যাম্প হতে পারে।
“পায়খানা ক্লিয়ার করার ট্যাবলেট” ব্যবহারের নির্দেশিকা
“পায়খানা ক্লিয়ার করার ট্যাবলেট” ব্যবহারের সময় কিছু সাধারণ নিয়ম মেনে চলা উচিত।
সাধারণ নির্দেশিকা:
ডাক্তারের পরামর্শ: যেকোনো ঔষধ সেবনের আগে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা আবশ্যক। বিশেষ করে যদি আপনার কোনো দীর্ঘস্থায়ী রোগ থাকে বা আপনি অন্য কোনো ঔষধ সেবন করছেন।
মাত্রা: ঔষধের প্যাকেজে উল্লিখিত নির্দেশিকা বা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সঠিক মাত্রায় ঔষধ সেবন করুন। অতিরিক্ত মাত্রায় সেবন করলে তা ক্ষতিকর হতে পারে।
পানি পান: ট্যাবলেট সেবনের সময় প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন। এটি ঔষধের কার্যকারিতা বাড়াতে এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কমাতে সাহায্য করে।
খাদ্যাভ্যাস: ঔষধ সেবনের পাশাপাশি ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার (ফল, সবজি, শস্য) খান এবং নিয়মিত শরীরচর্চা করুন।
দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহার: স্টিমুল্যান্ট ল্যাক্সেটিভগুলো দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত নয়। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া এগুলো নিয়মিত ব্যবহার করা উচিত নয়।
বাংলাদেশের বাজারে জনপ্রিয় কিছু “পায়খানা ক্লিয়ার করার ট্যাবলেট”
বাংলাদেশের ফার্মেসিগুলোতে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের “পায়খানা ক্লিয়ার করার ট্যাবলেট” পাওয়া যায়। যদিও নির্দিষ্ট কোনো “সেরা” ট্যাবলেট নেই কারণ এটি ব্যক্তির শারীরিক অবস্থা ও কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণের উপর নির্ভর করে, তবুও কিছু বহুল ব্যবহৃত ও পরিচিত নাম নিচে দেওয়া হলো।
| ট্যাবলেটের নাম (Brand Name – Example) | কার্যকরী উপাদান (Active Ingredient) | প্রকারভেদ (Type) | কার্যকারিতা |
| :———————————— | :——————————— | :————— | :———- |
| Aristolax / Senokot | Senna Glycosides | Stimulant | দ্রুত (৬-১২ ঘণ্টা) |
| Noryl-P | Bisacodyl | Stimulant | দ্রুত (৬-১২ ঘণ্টা) |
| Duphalac | Lactulose | Osmotic | মাঝারি (১২-২৪ ঘণ্টা) |
| Macrogol | Polyethylene Glycol (PEG) | Osmotic | মাঝারি (১২-২৪ ঘণ্টা) |
| Softovac | Various (Including Isabgol) | Bulk-forming/Osmotic | মাঝারি (১২-২৪ ঘণ্টা) |
| Lubri-dent | Docusate Sodium | Stool Softener | ধীর (২৪-৭২ ঘণ্টা) |
গুরুত্বপূর্ণ নোটিশ: উপরের তালিকাটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য। যেকোনো ঔষধ নির্বাচনের আগে অবশ্যই একজন রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। ঔষধের ব্র্যান্ড এবং সহজলভ্যতা ফার্মেসী ভেদে ভিন্ন হতে পারে।
“পায়খানা ক্লিয়ার করার ট্যাবলেট” এর উপকারিতা ও ঝুঁকি
উপকারিতা:
দ্রুত মুক্তি: কোষ্ঠকাঠিন্যের অস্বস্তি থেকে দ্রুত উপশম দেয়।
মল নরম করে: মলত্যাগকে সহজ ও ব্যথামুক্ত করে।
অন্ত্রের কার্যকারিতা: কিছু ঔষধ অন্ত্রের স্বাভাবিক কার্যকারিতা ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে।
রোগ প্রতিরোধ: দীর্ঘস্থায়ী কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণে সৃষ্ট রোগ (যেমন পাইলস) প্রতিরোধে সহায়ক।
ঝুঁকি ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া:
পেট ব্যথা ও ক্র্যাম্প: বিশেষ করে স্টিমুল্যান্ট ল্যাক্সেটিভের ক্ষেত্রে common।
গ্যাস ও পেট ফাঁপা: অস্মোটিক ল্যাক্সেটিভ ব্যবহারে দেখা যেতে পারে।
ডায়রিয়া: অতিরিক্ত মাত্রায় সেবন করলে ডায়রিয়া হতে পারে।
ইলেক্ট্রোলাইট ভারসাম্যহীনতা: দীর্ঘমেয়াদী বা অতিরিক্ত ব্যবহারে হতে পারে।
নির্ভরশীলতা: স্টিমুল্যান্ট ল্যাক্সেটিভের উপর নির্ভরশীলতা তৈরি হতে পারে।
অন্যান্য ঔষধের সাথে প্রতিক্রিয়া: আপনার সেবন করা অন্য ঔষধের সাথে প্রতিক্রিয়া করতে পারে।
প্রাকৃতিক উপায়ে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার উপায়
ঔষধ সেবনের পাশাপাশি বা ঔষধের বিকল্প হিসেবে কিছু প্রাকৃতিক উপায় কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে অত্যন্ত কার্যকর।
১. ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার
ফল: আপেল, পেঁপে, নাশপাতি, বেরি জাতীয় ফল।
সবজি: ব্রোকলি, পালং শাক, গাজর, অন্যান্য সবুজ শাকসবজি।
শস্য: ওটস, বার্লি, ব্রাউন রাইস, হোল হুইট ব্রেড।
অন্যান্য: বাদাম, বীজ, ডাল।
২. পর্যাপ্ত পানি পান
দৈনিক অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন। এটি মলকে নরম রাখতে এবং হজম প্রক্রিয়া সচল রাখতে সাহায্য করে।
৩. প্রোবায়োটিকস
দই, ঘোল বা প্রোবায়োটিক সাপ্লিমেন্ট অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে এবং হজমে সহায়তা করে।
৪. শরীরচর্চা
প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হালকা থেকে মাঝারি ব্যায়াম করুন। হাঁটা, দৌড়ানো, যোগা কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে সহায়ক।
৫. নিতম্বের অবস্থান (Squatting Position)
মলত্যাগের সময় কমোড ব্যবহার না করে নিচু হয়ে বা স্কোয়াটিং পজিশনে বসলে মলত্যাগ সহজ হয়। প্রয়োজনে টয়লেট স্টুল ব্যবহার করতে পারেন।
প্রো টিপ: প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এক গ্লাস হালকা গরম পানি পান করুন। এটি হজম প্রক্রিয়া শুরু করতে এবং শরীরকে ডিটক্সিফাই করতে সাহায্য করে।
কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে করণীয়
কোষ্ঠকাঠিন্য এড়াতে কিছু অভ্যাস গড়ে তোলা গুরুত্বপূর্ণ।
নিয়মিত মলত্যাগের অভ্যাস: যখনই বেগ আসবে, তখনই টয়লেটে যান। মল আটকে রাখবেন না।
পর্যাপ্ত ঘুম: প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন।
মানসিক চাপ কমানো: যোগা, মেডিটেশন বা পছন্দের কাজ করে মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
ধূমপান ও মদ্যপান পরিহার: এগুলো হজম ক্ষমতার উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
ফাইবার ও পানির পরিমাণ: খাদ্যতালিকায় ফাইবার এবং পানীয়ের পরিমাণ নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করুন।
External Link: World Health Organization (WHO) advice on healthy diet. https://www.who.int/news-room/fact-sheets/detail/healthy-diet
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী (FAQ)
প্রশ্ন ১: পায়খানা ক্লিয়ার করার ট্যাবলেট কত ঘন ঘন খাওয়া উচিত?
উত্তর: এটি নির্ভর করে কোন ধরণের ট্যাবলেট ব্যবহার করছেন এবং আপনার কোষ্ঠকাঠিন্যের তীব্রতার উপর। সাধারণত, এটি দৈনিক একবার বা প্রয়োজনে দুবার সেবন করা হয়। তবে, দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহারের জন্য ডাক্তারের পরামর্শ আবশ্যক।
প্রশ্ন ২: কোন “পায়খানা ক্লিয়ার করার ট্যাবলেট” সবচেয়ে দ্রুত কাজ করে?
উত্তর: স্টিমুল্যান্ট ল্যাক্সেটিভ (যেমন সেন্না বা বিসাকোডিল) সাধারণত সবচেয়ে দ্রুত কাজ করে, প্রায় ৬-১২ ঘণ্টার মধ্যে। তবে এগুলোর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বেশি হতে পারে।
প্রশ্ন ৩: গর্ভবতী অবস্থায় কি কোষ্ঠকাঠিন্যের ট্যাবলেট খাওয়া নিরাপদ?
উত্তর: গর্ভাবস্থায় যেকোনো ঔষধ সেবনের আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। কিছু ল্যাক্সেটিভ, যেমন বাল্ক-ফর্মিং ল্যাক্সেটিভ বা পলিইথিলিন গ্লাইকোল, সাধারণত নিরাপদ বলে বিবেচিত হয়, তবে ডাক্তারের অনুমতি ছাড়া কিছু খাবেন না।
প্রশ্ন ৪: দীর্ঘমেয়াদী কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য কি ঔষধের উপর নির্ভরশীল হওয়া উচিত?
উত্তর: না, দীর্ঘমেয়াদী কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য ঔষধের উপর নির্ভরশীল হওয়া উচিত নয়। এটি অন্ত্রের স্বাভাবিক কার্যকারিতা ব্যাহত করতে পারে। জীবনযাত্রার পরিবর্তন, যেমন খাদ্য ও ব্যায়াম, দীর্ঘমেয়াদী সমাধানের জন্য বেশি জরুরি।
প্রশ্ন ৫: বাচ্চাদের জন্য কোষ্ঠকাঠিন্যের ট্যাবলেট কি ভিন্ন হয়?
উত্তর: হ্যাঁ, বাচ্চাদের জন্য ঔষধের মাত্রা এবং ধরণ ভিন্ন হয়। শিশুদের কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য অবশ্যই শিশু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।
প্রশ্ন ৬: “পায়খানা ক্লিয়ার করার ট্যাবলেট” কি ওজন কমাতে সাহায্য করে?
উত্তর: না, এই ট্যাবলেটগুলো ওজন কমানোর জন্য নয়। এগুলো মূলত কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার জন্য ব্যবহৃত হয়। ওজন কমানোর জন্য সঠিক খাদ্য ও ব্যায়াম দরকার।
প্রশ্ন ৭: ঔষধের পাশাপাশি কি অন্য কোনো সাপ্লিমেন্ট ব্যবহার করা যেতে পারে?
উত্তর: কিছু সাপ্লিমেন্ট, যেমন ফাইবার সাপ্লিমেন্ট (ইসুবগুল) বা প্রোবায়োটিকস, কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে সহায়ক হতে পারে। তবে যেকোনো নতুন সাপ্লিমেন্ট শুরু করার আগে ডাক্তারের সাথে কথা বলা উচিত।
উপসংহার
কোষ্ঠকাঠিন্য একটি সাধারণ সমস্যা হলেও, এটি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে পারে যদি এটিকে অবহেলা করা হয়। “পায়খানা ক্লিয়ার করার ট্যাবলেট” দ্রুত উপশম দিতে পারে, তবে এটি ঔষধের উপর নির্ভরতা তৈরি না করার এবং সর্বদা একটি স্বাস্থ্যকর জীবনধারা বজায় রাখার প্রতি নির্দেশনা দেয়। পর্যাপ্ত পানি পান, ফাইবার-সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ এবং নিয়মিত শারীরিক কার্যকলাপ কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধের সেরা উপায়। যদি আপনার কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হয়, তবে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন। সঠিক জ্ঞান এবং সহজ কিছু অভ্যাসের পরিবর্তন আপনাকে একটি সুস্থ হজম প্রক্রিয়া ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করবে।