“`html
পায়ের রগে ব্যথা হওয়া একটি সাধারণ কিন্তু বেশ বিরক্তিকর সমস্যা। এটি আপনার দৈনন্দিন কাজকর্মে বাধা সৃষ্টি করতে পারে এবং অস্বস্তি বাড়াতে পারে। কিন্তু চিন্তা করবেন না, এই সমস্যার সমাধান আছে! আমরা এখানে আপনাকে ধাপে ধাপে দেখাবো কিভাবে এই ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে পারেন এবং কিছু সহজ ঘরোয়া উপায় ও ঔষধ সম্পর্কে আলোচনা করব যা আপনাকে দ্রুত সুস্থ হতে সাহায্য করবে।
Table of Contents
- পায়ের রগে ব্যথা কেন হয়?
- পায়ের রগে ব্যথার ঔষধ: কখন ডাক্তারের শরণাপন্ন হবেন?
- দ্রুত আরামের জন্য ঘরোয়া উপায়
- প্রাকৃতিক ঔষধ ও ভেষজ ব্যবহার
- ওভার-দ্য-কাউন্টার (OTC) ঔষধ
- পুষ্টি এবং জীবনযাত্রার পরিবর্তন
- বিভিন্ন প্রকার ব্যথার জন্য ঔষধ
- পায়ের রগে ব্যথা প্রতিরোধ
- বিশেষ টিপস: গর্ভাবস্থায় পায়ের রগে ব্যথা
- কখন ঘরোয়া চিকিৎসা যথেষ্ট নয়
- FAQ: আপনার জিজ্ঞাসার উত্তর
- ১. পায়ের রগে হালকা ব্যথা হলে কি সাথে সাথে ঔষধ খাওয়া উচিত?
- ২. কোন কোন ভিটামিন ও খনিজ পায়ের রগে ব্যথা কমাতে সাহায্য করে?
- ৩. দীর্ঘক্ষণ বসে থাকার কারণে পায়ের রগে ব্যথা হলে কি করব?
- ৪. ভেরিকোস ভেইন (Varicose Veins) কি পায়ের রগে ব্যথার কারণ হতে পারে?
- ৫. আমি কি ব্যথানাশক ক্রিম বা জেল ব্যবহার করতে পারি ?
- ৬. ব্যায়াম কি পায়ের রগে ব্যথা বাড়িয়ে দিতে পারে?
- ৭. বাড়িতে তৈরি কোন বিশেষ পানীয় রগের ব্যথা কমাতে পারে?
- উপসংহার
পায়ের রগে ব্যথা কেন হয়?
পায়ের রগ বা শিরায় ব্যথা বিভিন্ন কারণে হতে পারে। এটি সাধারণত পেশীতে টান লাগা, অতিরিক্ত পরিশ্রম, দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা বা বসে থাকার ফলে হয়ে থাকে। এছাড়াও, শরীরের পুষ্টি উপাদানের অভাব, যেমন পটাসিয়াম বা ম্যাগনেসিয়ামের অভাব, এবং কিছু শারীরিক অসুস্থতা, যেমন ডায়াবেটিস বা রক্ত সঞ্চালনের সমস্যাও এর জন্য দায়ী হতে পারে।
সাধারণ কারণসমূহ:
- পেশীতে টান: হঠাৎ করে পেশী সংকুচিত হলে বা অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে রগে টান ধরে ব্যথা হতে পারে।
- পানি শূন্যতা: শরীরে জলের অভাব হলে পেশী শক্ত হয়ে যায় এবং রগে ব্যথা হতে পারে।
- পুষ্টির অভাব: ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়ামের মতো খনিজ পদার্থের অভাব হলে রগে ব্যথা হতে পারে।
- অতিরিক্ত পরিশ্রম: যারা খেলাধুলা করেন বা কায়িক শ্রম করেন, তাদের পেশীতে অতিরিক্ত চাপ পড়ার কারণে রগে ব্যথা হতে পারে।
- দীর্ঘক্ষণ একভাবে থাকা: দীর্ঘ সময় ধরে দাঁড়িয়ে বা বসে থাকলে রক্ত সঞ্চালনে বাধা সৃষ্টি হয়, যা রগে ব্যথার কারণ হতে পারে।
- বয়স: বয়স বাড়ার সাথে সাথে পেশী এবং রক্তনালীর নমনীয়তা কমে যায়, ফলে রগে ব্যথা হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।
- কিছু নির্দিষ্ট রোগ: ডায়াবেটিস, কিডনি রোগ, থাইরয়েডের সমস্যা, এবং রক্ত সঞ্চালনের সমস্যা (যেমন ভেরিকোস ভেইন) রগে ব্যথার কারণ হতে পারে।
- গর্ভধারণ: গর্ভাবস্থায় শরীরে অতিরিক্ত ওজন এবং হরমোনের পরিবর্তনের কারণে পায়ে রগে ব্যথা হতে পারে।
পায়ের রগে ব্যথার ঔষধ: কখন ডাক্তারের শরণাপন্ন হবেন?
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, পায়ের রগের হালকা ব্যথা ঘরোয়া চিকিৎসায় বা সাধারণ ঔষধেই সেরে যায়। তবে, কিছু পরিস্থিতিতে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া অত্যাবশ্যক। যদি আপনার ব্যথা খুব তীব্র হয়, দীর্ঘস্থায়ী হয়, ফোলাভাব বা লালচে ভাব দেখা দেয়, অথবা ব্যথা আপনার স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে ব্যাহত করে, তবে দ্রুত একজন চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করুন।
কখন ডাক্তারের পরামর্শ জরুরি:
- হঠাৎ করে তীব্র ব্যথা শুরু হলে।
- ব্যথার সাথে ফোলা বা লাল হয়ে গেলে।
- ব্যথার স্থানটি স্পর্শ করলে গরম অনুভূত হলে।
- টনটনে বা জ্বালাপোড়া ব্যথা হলে।
- ব্যথার কারণে পা নাড়াচাড়া করতে সমস্যা হলে।
- যাদের রক্ত জমাট বাঁধার ইতিহাস আছে, তাদের ক্ষেত্রে।
ডাক্তার আপনার উপসর্গগুলি শুনে এবং পরীক্ষা করে কারণ নির্ণয় করবেন এবং সেই অনুযায়ী উপযুক্ত চিকিৎসার পরামর্শ দেবেন। প্রয়োজনে তিনি কিছু নির্দিষ্ট পরীক্ষার (যেমন আল্ট্রাসাউন্ড) নির্দেশ দিতে পারেন।
দ্রুত আরামের জন্য ঘরোয়া উপায়
পায়ের রগে ব্যথা কমাতে বেশ কিছু ঘরোয়া উপায় খুব কার্যকর। এগুলি সাধারণত সহজলভ্য এবং ব্যবহার করাও নিরাপদ।
কার্যকরী ঘরোয়া সমাধান:
- হালকা গরম সেঁক: একটি তোয়ালে গরম পানিতে ভিজিয়ে ঠান্ডা করে ব্যথাযুক্ত স্থানে লাগান। অথবা, একটি হট ওয়াটার ব্যাগ ব্যবহার করতে পারেন। এটি পেশী শিথিল করতে এবং রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে সাহায্য করে।
- ঠান্ডা সেঁক: যদি ফোলা ভাব থাকে, তবে একটি পাতলা কাপড়ে বরফ মুড়ে আক্রান্ত স্থানে ১৫-২০ মিনিট ধরে রাখুন। এটি প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
- ম্যাসেজ: হালকা হাতে আক্রান্ত স্থান আলতোভাবে ম্যাসাজ করলে পেশী শিথিল হয় এবং রক্ত প্রবাহ বাড়ে। নারকেল তেল, অলিভ অয়েল বা যেকোনো ম্যাসাজ অয়েল ব্যবহার করতে পারেন।
- শরীরকে হাইড্রেটেড রাখা: প্রচুর পরিমাণে জল পান করুন। এটি পেশী সংকোচন কমাতে এবং শরীরকে সতেজ রাখতে সাহায্য করে।
- শরীরের টান (Stretching): আক্রান্ত পা সোজা রেখে গোড়ালির পাতা নিজের দিকে টানার চেষ্টা করুন। এটি পেশীকে প্রসারিত করে এবং টান কমাতে সাহায্য করে।
- বিশ্রাম: ব্যথা চলাকালীন আক্রান্ত পায়ে অতিরিক্ত চাপ দেওয়া থেকে বিরত থাকুন। পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন।
- উঁচু করে রাখা: যখন বসে বা শুয়ে থাকবেন, তখন পায়ের নিচে বালিশ দিয়ে পা সামান্য উঁচু করে রাখুন। এটি ফোলা কমাতে এবং রক্ত সঞ্চালন উন্নত করতে সহায়ক।
প্রাকৃতিক ঔষধ ও ভেষজ ব্যবহার
কিছু প্রাকৃতিক উপাদান ব্যথা উপশমে এবং রগের স্বাস্থ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যেমন:
প্রাকৃতিক উপাদান হিসেবে:
- হলুদ: হলুদে থাকা কারকিউমিন প্রদাহ বিরোধী এবং ব্যথানাশক হিসেবে কাজ করে। এক গ্লাস গরম দুধে এক চামচ হলুদ মিশিয়ে পান করতে পারেন, অথবা হলুদের পেস্ট ব্যথার স্থানে লাগাতে পারেন।
- আদা: আদাও একটি শক্তিশালী প্রদাহ বিরোধী উপাদান। আদা চা পান করলে বা আদা সেঁক দিলে উপকার পাওয়া যায়।
- তুলসী: তুলসী পাতার রস বা তুলসী পাতা বেটে ব্যথার স্থানে ব্যবহার করলে আরাম পাওয়া যায়।
- অ্যালোভেরা: অ্যালোভেরার জেল ত্বকের নিচে প্রদাহ কমাতে এবং ব্যথা উপশমে সাহায্য করে।
ওভার-দ্য-কাউন্টার (OTC) ঔষধ
যদি ঘরোয়া উপায়ে কাজ না হয়, তবে কিছু ওভার-দ্য-কাউন্টার (OTC) ঔষধ ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে। এগুলি সাধারণত ফার্মেসিতে প্রেসক্রিপশন ছাড়াই পাওয়া যায়।
সাধারণ OTC ঔষধসমূহ:
- ব্যথানাশক: প্যারাসিটামল (Paracetamol) বা আইবুপ্রোফেন (Ibuprofen) এর মতো ঔষধগুলি ব্যথা এবং প্রদাহ কমাতে বেশ কার্যকর।
- মাসল রিলাক্সেন্ট: কিছু ক্ষেত্রে, পেশী শিথিল করার জন্য ফার্মাসিস্টের পরামর্শে মাসল রিলাক্সেন্ট ব্যবহার করা যেতে পারে।
- স্থানীয়ভাবে ব্যবহারযোগ্য ক্রিম ও জেল: কিছু টপিকাল (topical) ক্রিম বা জেল (যেমন ডিক্লোফেনাক জেল) সরাসরি ব্যথার স্থানে লাগালে দ্রুত আরাম দেয়।
গুরুত্বপূর্ণ: যেকোনো ঔষধ সেবনের আগে তার ডোজ এবং ব্যবহারের নিয়মাবলী ভালোভাবে জেনে নিন। প্রয়োজনে ফার্মাসিস্ট বা ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
পুষ্টি এবং জীবনযাত্রার পরিবর্তন
পায়ের রগে ব্যথা কমাতে এবং প্রতিরোধে সঠিক পুষ্টি এবং জীবনযাত্রার পরিবর্তন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
খাদ্যাভ্যাস
আপনার খাদ্যতালিকায় নিম্নলিখিত পুষ্টি উপাদানগুলি অন্তর্ভুক্ত করুন:
- ম্যাগনেসিয়াম: সবুজ শাকসবজি (যেমন পালং শাক), বাদাম, বীজ, এবং ডার্ক চকোলেটে ম্যাগনেসিয়াম পাওয়া যায়।
- পটাসিয়াম: কলা, মিষ্টি আলু, অ্যাভোকাডো, এবং দই পটাসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার।
- ক্যালসিয়াম: দুধ, দই, পনির, এবং সবুজ শাকসবজিতে ক্যালসিয়াম বেশি থাকে।
- ভিটামিন ডি: সূর্যের আলো এবং ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার (যেমন মাছ, ডিম) পেশী এবং হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য জরুরি।
জীবনযাত্রার পরিবর্তন
- নিয়মিত ব্যায়াম: হালকা স্ট্রেচিং এবং নিয়মিত হাঁটাচলা পেশী শক্তিশালী করে এবং রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়।
- সঠিক জুতো পরা: আরামদায়ক এবং সঠিক মাপের জুতো পরুন, বিশেষ করে যদি আপনাকে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।
- ধূমপান ত্যাগ: ধূমপান রক্তনালীকে সংকুচিত করে রক্ত সঞ্চালনে বাধা দেয়, তাই এটি ত্যাগ করা উচিত।
- ওজন নিয়ন্ত্রণ: শরীরের অতিরিক্ত ওজন পায়ের উপর চাপ সৃষ্টি করে, তাই স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা জরুরি।
বিভিন্ন প্রকার ব্যথার জন্য ঔষধ
পায়ের রগে ব্যথার কারণের উপর নির্ভর করে ঔষধের ধরনও ভিন্ন হতে পারে।
সাধারণ পেশী টান বা ক্র্যাম্পের জন্য:
NSAIDs (Non-Steroidal Anti-Inflammatory Drugs) যেমন আইবুপ্রোফেন বা ন্যাপ্রোক্সেন ব্যথা ও প্রদাহ কমাতে পারে। Acetaminophen (প্যারাসিটামল) ব্যথা উপশমে সাহায্য করে।
রক্ত সঞ্চালন জনিত সমস্যার জন্য:
যদি ভেরিকোস ভেইন (Varicose Veins) বা ডিপ ভেইন থ্রম্বোসিস (DVT) এর মতো সমস্যা থাকে, তবে ডাক্তার বিশেষ থেরাপি বা রক্ত পাতলা করার ঔষধ (anticoagulants) দিতে পারেন।
স্নায়ুজনিত ব্যথার জন্য (Neuropathic Pain):
ডায়াবেটিসজনিত নিউরোপ্যাথির মতো ক্ষেত্রে, ডাক্তার নির্দিষ্ট নিউরোপ্যাথিক ব্যথানাশক ঔষধ (যেমন গাবাপেন্টিন,Pregabalin) প্রেসক্রাইব করতে পারেন।
ইলেক্ট্রোলাইট ভারসাম্যহীনতার জন্য:
যদি রক্ত পরীক্ষায় ম্যাগনেসিয়াম বা পটাসিয়ামের অভাব ধরা পড়ে, তবে ডাক্তার সাপ্লিমেন্ট গ্রহণের পরামর্শ দিতে পারেন।
ব্যথার কারণ | প্রস্তাবিত ঔষধ/চিকিৎসা | বিবেচ্য বিষয় |
---|---|---|
সাধারণ পেশী টান | NSAIDs, Acetaminophen, মাসল রিলাক্সেন্ট (প্রয়োজনে) | ডোজ এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে সচেতনতা। |
প্রদাহ ও ফোলা | NSAIDs (টপিকাল বা ওরাল), বরফ সেঁক | ত্বকের কোনো সংবেদনশীলতা আছে কিনা তা দেখুন। |
ভেরিকোস ভেইন | কম্প্রেশন স্টকিংস, জীবনযাত্রার পরিবর্তন, ডাক্তারের পরামর্শে ঔষধ | দীর্ঘমেয়াদী সমাধানের জন্য ডাক্তারের ফলো-আপ জরুরি। |
ডায়াবেটিস জনিত স্নায়ু ব্যথা | নিউরোপ্যাথিক ব্যথানাশক, রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণ | ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। |
পায়ের রগে ব্যথা প্রতিরোধ
ব্যথা উপশমের পাশাপাশি, ভবিষ্যতের জন্য কিছু প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা বুদ্ধিমানের কাজ।
প্রতিরোধের উপায়:
- পর্যাপ্ত হাইড্রেশন: সারাদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করুন।
- খাদ্যাভ্যাস: ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম এবং ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খান।
- নিয়মিত স্ট্রেচিং ও ব্যায়াম: বিশেষ করে যারা খেলাধুলা করেন, তাদের ওয়ার্ম-আপ এবং কুল-ডাউন রুটিন থাকা উচিত।
- সঠিক জুতো: ফ্ল্যাট সোলযুক্ত জুতো বা হাই হিল এড়িয়ে চলুন।
- দীর্ঘক্ষণ বসে বা দাঁড়িয়ে থাকা এড়িয়ে চলুন: প্রতি ৩০-৬০ মিনিট পর পর একটু হাঁটাহাঁটি করুন বা পা প্রসারিত করুন।
- ওজন নিয়ন্ত্রণ: অতিরিক্ত ওজন পায়ের উপর চাপ সৃষ্টি করে।
- ধূমপান ত্যাগ এবং পরিমিত মদ্যপান করুন।
বিশেষ টিপস: গর্ভাবস্থায় পায়ের রগে ব্যথা
গর্ভাবস্থায় অনেক মহিলাই পায়ের রগে ব্যথার সমস্যায় ভোগেন। এই সময় সাধারণত শরীর খুব সংবেদনশীল থাকে, তাই যেকোনো ঔষধ গ্রহণের আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
- হালকা ব্যায়াম: ডাক্তারের অনুমতি সাপেক্ষে, হালকা হাঁটা বা সাঁতার কাটা উপকারী হতে পারে।
- আরামদায়ক জুতো ব্যবহার করুন।
- বেশি সময় দাঁড়িয়ে থাকা বা একই ভঙ্গিতে বসে থাকা এড়িয়ে চলুন।
- গোড়ালি এবং পায়ের পাতা নিয়মিত ঘোরান।
- রাতে পায়ের নিচে বালিশ দিয়ে শুয়ে থাকুন।
কখন ঘরোয়া চিকিৎসা যথেষ্ট নয়
কিছু লক্ষণ দেখলে বুঝতে হবে যে আপনার সমস্যাটি সাধারণ নয় এবং ডাক্তারের সাহায্য নেওয়া জরুরি।
লাল সংকেত:
- যদি ব্যথা হঠাৎ এবং তীব্রভাবে শুরু হয়।
- যদি ব্যথার সাথে পা ফুলে যায়, লাল হয়ে যায় বা স্পর্শ করলে গরম অনুভূত হয়।
- যদি পায়ে কোনো আঘাত না লাগা সত্ত্বেও ব্যথা হয়।
- যদি ব্যথার কারণে আপনি স্বাভাবিকভাবে হাঁটতে না পারেন।
- যদি আপনার ডায়াবেটিস বা রক্ত জমাট বাঁধার মতো পূর্ববর্তী কোনো রোগ থাকে।
এই লক্ষণগুলি ডিপ ভেইন থ্রম্বোসিস (DVT) বা অন্যান্য গুরুতর সমস্যার ইঙ্গিত দিতে পারে। তাই অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
FAQ: আপনার জিজ্ঞাসার উত্তর
১. পায়ের রগে হালকা ব্যথা হলে কি সাথে সাথে ঔষধ খাওয়া উচিত?
না, অনেকেই মনে করেন হালকা ব্যথায় ঔষধ গ্রহণ করা ঠিক নয়। প্রথমে ঘরোয়া পদ্ধতি যেমন হালকা গরম সেঁক, ম্যাসেজ, বা পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন। যদি ব্যথা না কমে বা বেড়ে যায়, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ঔষধ সেবন করুন।
২. কোন কোন ভিটামিন ও খনিজ পায়ের রগে ব্যথা কমাতে সাহায্য করে?
ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি পায়ের পেশীর কার্যকারিতা এবং স্বাস্থ্য বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এদের অভাব হলে রগে টান বা ব্যথা হতে পারে।
৩. দীর্ঘক্ষণ বসে থাকার কারণে পায়ের রগে ব্যথা হলে কি করব?
দীর্ঘক্ষণ একই ভঙ্গিতে বসে থাকা এড়িয়ে চলুন। প্রতি ৩০-৬০ মিনিট পর পর উঠে একটু হাঁটাহাঁটি করুন এবং পা প্রসারিত করুন। বসার সময় পা ক্রস করে না বসে, সোজা করে রাখুন।
৪. ভেরিকোস ভেইন (Varicose Veins) কি পায়ের রগে ব্যথার কারণ হতে পারে?
হ্যাঁ, ভেরিকোস ভেইন হল শিরার একটি সমস্যা যেখানে রক্ত সঠিকভাবে প্রবাহিত হতে পারে না, ফলে শিরা ফুলে যায় এবং ব্যথা হতে পারে। এই ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ এবং নির্দিষ্ট চিকিৎসা প্রয়োজন।
৫. আমি কি ব্যথানাশক ক্রিম বা জেল ব্যবহার করতে পারি ?
হ্যাঁ, ওভার-দ্য-কাউন্টার ব্যথানাশক ক্রিম বা জেল (যেমন ডিক্লোফেনাক) আক্রান্ত স্থানে লাগালে তাৎক্ষণিক আরাম পাওয়া যায়। তবে, ত্বকের কোনো সংবেদনশীলতা থাকলে বা কোনো বিশেষ রোগ থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
৬. ব্যায়াম কি পায়ের রগে ব্যথা বাড়িয়ে দিতে পারে?
যদি ব্যায়াম করার সময় সঠিক ফর্ম অনুসরণ না করা হয় বা পেশীতে অতিরিক্ত চাপ পড়ে, তবে ব্যথা বাড়তে পারে। তবে, নিয়মিত হালকা ব্যায়াম (যেমন স্ট্রেচিং) দীর্ঘমেয়াদী ব্যথা প্রতিরোধে সাহায্য করে।
৭. বাড়িতে তৈরি কোন বিশেষ পানীয় রগের ব্যথা কমাতে পারে?
হ্যাঁ, যেমন আদা চা বা হলুদের দুধ পান করলে তা প্রদাহ কমাতে সাহায্য করতে পারে। পর্যাপ্ত জল পান করাও খুব জরুরি।
উপসংহার
পায়ের রগে ব্যথা একটি সাধারণ সমস্যা হলেও, সঠিক যত্ন এবং চিকিৎসার মাধ্যমে এটি কার্যকরভাবে মোকাবিলা করা সম্ভব। আমরা এই আর্টিকেলে ব্যথা কমানোর জন্য ঘরোয়া উপায়, প্রাকৃতিক ঔষধ, OTC ঔষধ এবং জীবনযাত্রার পরিবর্তন নিয়ে আলোচনা করেছি। মনে রাখবেন, আপনার স্বাস্থ্যের ব্যাপারে কোনো সন্দেহ বা উদ্বেগ থাকলে অবশ্যই একজন পেশাদার চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন। আপনার পায়ের সুস্থতা কামনা করি!
“`