শীতকালে হাঁপানি রোগীদের সতর্কতা
শীতকালে হাঁপানি রোগীদের সতর্কতা ও করণীয়
বিশ্বে প্রায় ৩৪ কোটি হাঁপানি রোগী রয়েছে। হাঁপানির কারণে সারা বিশ্বে প্রতিদিন মারা যায় প্রায় এক হাজার মানুষ। এই তথ্য জানিয়েছে গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ ফর অ্যাজমা (গিনা)। এদিকে শীতকাল হাঁপানি রোগীদের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ঋতু। এ সময় শিশুদের ক্ষেত্রে ৮০ শতাংশ এবং বড়োদের ক্ষেত্রে ৪০ শতাংশ হারে এ রোগের তীব্রতা বেড়ে যায়।
কেন হয় হাঁপানি
বংশগত কারণে এটি হতে পারে। তা ছাড়া ঠান্ডা আবহাওয়া, পশুর লোম, আরশোলা, ফুলের রেণু, বায়ুদূষণ, সিগারেটের ধোঁয়া, কারখানার বিভিন্ন ক্ষতিকর পদার্থ, রঙের ঝাঁজালো গন্ধ, ঝাঁজালো মসলা—প্রভৃতির জন্যও হাঁপানি রোগীদের শ্বাসকষ্টের টান তৈরি হয়।
শীতকালে হাঁপানি বেড়ে যায় কেন শীতে আবহাওয়ার তাপমাত্রা দ্রুত ওঠানামা করে। বায়ুদূষণের পাশাপাশি বাতাসে ধুলোবালির পরিমাণ বেড়ে যায়। বিভিন্ন ভাইরাস ও ফ্লুর প্রকোপ বৃদ্ধি পায়। এছাড়া সকালের শিশির, কুয়াশা অনেকসময় শ্বাসকষ্টের কারণ হতে পারে।
শীতকালে হাঁপানি রোগীদের সতর্কতা ও করণীয়
- যাদের হাঁপানি আছে তারা ঠান্ডা এড়িয়ে চলুন।
- সকাল-সন্ধ্যায় হাঁটার অভ্যাস থাকলে সময়টি বদলে নিন। এ সময় আবহাওয়ার তারতম্য হয় বেশি।
- বাইরে বের হলে মাস্ক ব্যবহার করবেন।
- শীতের পোশাক ব্যবহার করবেন।
- খালি পায়ে হাঁটবেন না।
- শোয়ার ঘরে বেশি মালামাল রাখবেন না। জিনিসপত্র ঢেকে রাখবেন, যাতে ধুলোবালি না ওড়ে।
- ফ্লু ও নিউমোনিয়ার টিকা না নিয়ে থাকলে শীতের শুরুতেই টিকা নিয়ে নিন।
- ধূমপানের অভ্যাস থাকলে তা পরিহার করুন।
- বাড়িতে ইনহেলার, নেবুলাইজার এবং অন্যান্য প্রাথমিক ওষুধ রাখবেন।
হাঁপানী রোগীদের জন্য উপকারী খাবার
গাজর, আপেল, ব্রকলি, আদা, রসুন, মধু, আদা চা ও শীতকালীন শাক-সবজি হাঁপানি প্রতিরোধে খুবই কার্যকর।
হাঁপানী রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা
স্পাইরোমেট্রি পরীক্ষা : রোগীর শ্বাসনালিতে শ্বাস গ্রহণে বাধা আছে কি না, তা নির্ণয়ের জন্য এটি করা হয়। মেথাকলিন চ্যালেঞ্জ পরীক্ষা : এর মাধ্যমে শ্বাসনালির অতি সংবেদনশীলতা পরীক্ষা করা হয়।
রক্তপরীক্ষা : রক্তে ও কফে ইয়োসিনোফিল ও সিরাম আইজিইয়ের মাত্রা বেশি আছে কি না, তা নির্ণয় করা হয়।
স্কিন প্রিক টেস্ট : অ্যালার্জেন বা ট্রিগার পরীক্ষা করা হয়।
অ্যালার্জি প্যানেল টেস্ট : অ্যাজমা রোগীর কোন কোন জিনিসে অ্যালার্জি আছে, তা শনাক্ত করা হয়।
এ সময়ে হাঁপানির সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন। প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সে অনুযায়ী চিকিৎসা গ্রহণ করুন।